Sunday, March 13, 2016

২০টি খেলায় বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম সেঞ্চুরি তামিমের

ফ্রেড ট্রুম্যানের অমর ওই কথাটা কি কোথাও শুনেছেন তামিম ইকবাল! নাকি সাবেক ইংল্যান্ড ফাস্ট বোলারের সঙ্গে বাংলাদেশের বাঁহাতি ওপেনারের কথা মিলে যাওয়া নেহাতই কাকতালীয়?
টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম বোলার হিসেবে ৩০০ উইকেট নেওয়ার পর ট্রুম্যান বলেছিলেন, যে-ই এই রেকর্ড ভাঙুক, সে হবে খুব ক্লান্ত। ইংরেজিতে বললে ট্রুম্যানের কথা বলার ধরনটা বুঝতে সুবিধা হবে, ‘হুএভার ব্রেকস দিস রেকর্ড, হি উইল বি ব্লাডি টায়ার্ড।’
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম সেঞ্চুরি অবশ্যই ইতিহাস। তবে তামিমের মুকুটে তা আরেকটি নতুন পালক মাত্র। সবচেয়ে গর্ব করার মতো কীর্তিটি তো হয়ে গেছে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আগের ম্যাচেই। টেস্ট ও ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে বেশি রান আগে থেকেই তাঁর। টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ডটিও সেদিন কেড়ে নিয়েছেন সাকিবের কাছ থেকে। ক্রিকেটের তিন সংস্করণেই বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ইনিংসও তাঁর ব্যাট থেকেই।
বাংলাদেশের ব্যাটিং রেকর্ডে এই যে একচ্ছত্র আধিপত্য, এটি কেমন লাগে তামিমের? এই প্রশ্নের উত্তরেই ট্রুম্যানকে মনে করিয়ে দিলেন তামিম, ‘আমি রেকর্ডগুলোকে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই, যাতে যে-ই ভাঙুক, তার যেন খুব কষ্ট হয়।’
রেকর্ড হয়ই ভেঙে যাওয়ার জন্য। তাঁর রেকর্ডও যে অমর হয়ে থাকবে না, তামিমও তা জানেন। তবে তা ভেঙে যাওয়ার দিনটি ভেবে যত না মন খারাপ হয়, তার চেয়ে রোমাঞ্চিত হন অন্য একটা কথা ভেবে, ‘আমি আরও ৫/৭/৮ বছর যা-ই খেলি না কেন, রেকর্ডটা ভাঙা যেন কঠিন হয়, তা নিশ্চিত করে যাব। একদিন যখন তা ভাঙবে, বাংলাদেশ তখন অন্য রকম দল হয়ে যাবে।’
রেকর্ড ভাঙে, কিন্তু কিছু কীর্তি অনন্যই থেকে যায়। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম সেঞ্চুরি যেমন আর কেউ করতে পারবে না। সেই সেঞ্চুরির কথা নাকি তামিমের প্রথম মাথায় এসেছে ৮৮ থেকে ছক্কা মেরে ৯৪ রানে পৌঁছানোর পর, ‘এর আগ পর্যন্ত সেঞ্চুরির কথা ভাবিইনি। তখন মনে হলো, হতে পারে।’
সেই সেঞ্চুরির পর উদ্যাপনের ব্যাখ্যা দুই ইনিংসের বিরতিতেই দিয়েছেন। সেটিই বললেন আবারও, ‘একদিন কথা হচ্ছিল, টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরি কে করবে। আমি কোচকে বলেছিলাম, আমিই করব।’ এরপরই হাসি দিয়ে যোগ করলেন, ‘এমন অনেক ওয়াদাই তো করি, সব তো রাখতে পারি না। এটা পেরেছি, এই আর কী!’
সেঞ্চুরির আগেই আরেকটি ক্ষেত্রেও ‘প্রথম’ হয়ে গেছেন। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম এক হাজার রান। সাকিবের সঙ্গে একটা প্রতিযোগিতা ছিল। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচেই ছাড়িয়ে গেছেন সাকিবকে। কাল ‘হাজার’ ছুঁয়ে আরও অনেকটা দূর। এর আগে ওয়ানডেতে প্রথম চার হাজার রানের মাইলফলক ছুঁতেও দুজন এমন গায়ে গায়ে দৌড়েছিলেন। সেটি তামিমের ভালোই মনে আছে, ‘ওয়ানডেতে ও আমার আগে চার হাজার করেছিল। এবার আমি আগে করেছি। ভালো তো লাগছেই।’
বাছাই পর্বের বাধা ভালোভাবেই উতরানো গেছে। এবার আরও বড় পরীক্ষা। গত কিছুদিন তামিমের যে স্বপ্নযাত্রা, তাতে বড় মঞ্চে দাঁড়াতে মুখিয়ে থাকাটাই স্বাভাবিক। এই সেঞ্চুরির আনন্দ ধর্মশালাতেই রেখে গিয়ে নতুন লক্ষ্য ঠিক করার সময় এখন। ওমানের বিপক্ষে ম্যাচ শেষ হতে না হতেই তা করতে শুরুও করে দিয়েছেন, ‘আমরা এখন আরও বড় একটা মঞ্চে। দুদিনের মধ্যে বড় একটা দলের মুখোমুখি হতে হবে। ওই ম্যাচেও অবদান রাখতে চাই।’

No comments:

Post a Comment