Saturday, March 19, 2016

Live Cricket Pak VS India

 Pakistan vs India

Enjoy Live match Pak Vs Indi

যে কারণে আজ ভারত হারবে

টি২০ বিশ্বকাপে পাকিস্তান-ভারত ম্যাচের জন্য কোলকাতা ইডেন গার্ডেন্স তৈরি। এখন শুধু অপেক্ষা। আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তানের হাই ভোল্টেজ ম্যাচ নিয়ে উন্মাদনা চরমে। প্রথম ম্যাচেই নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে বেশ খানিকা চাপ নিয়েই খেলতে নামবে ধোনির মেন ইন ব্লু। অন্যদিকে বাংলাদেশকে ৫৫ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে খানিকটা স্বস্তি নিয়েই ভারতের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে পাকিস্তান। শনিবারের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এখানে দেয়া হলো।
এই প্রথমবার কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে টি২০ ফরম্যাটে মুখোমুখি হচ্ছে ভারত-পাকিস্তান।
একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে ইডেন গার্ডেন্সে পাকিস্তান কখনো হারেনি। ১৯৮৭, ১৯৮৯, ২০০৪ ও ২০১৩ সালে এই চারবার জিতেছে পাকিস্তান।
কলকাতায় ম্যাচে পাকিস্তানের জয়ের হার ১০০ শতাংশ। গত ১৬ মার্চ কলকাতায় টি২০ বিশ্বকাপ ২০১৬-র ম্যাচে বাংলাদেশকে ৫৫ রানে হারিয়েছে পাকিস্তান।
এই ম্যাচটি প্রথমে ধর্মশালায় খেলার কথা ছিল। কিন্তু নিরাপত্তার খাতিরে ম্যাচটিকে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে সরিয়ে আনা হয়েছে।

Friday, March 18, 2016

পাকিস্তানের যে দুই অস্ত্র আজ ভারত তে ছারখার করবে


 ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই অন্যরকম এক উত্তেজনা। তবে এ উত্তেজনা দুই দেশের মাঝেই শুধু সীমাবদ্ধ থাকে না, এর রোমাঞ্চ ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বেই। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটছে না। ফেসবুকসহ সব সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেই ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে দুই দলের সমর্থকদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য।
যদিও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে পাকিস্তান আদৌ ভারতে যাবে কি না, শুরুতে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল। আর তাতেই পাক-ভারত মহারণ দেখার আশা ফিকে হয়ে যায় ক্রিকেটপ্রেমীদের। তবে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অনেক আগেই কলকাতায় পৌঁছে আফ্রিদিরা এবং বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচও তারা খেলে ফেলেছে বাংলাদেশের বিপক্ষে। এবার মহারণে মাঠে নামার পালা। কলকাতার ইডেনেই আজ শনিবার ভারতের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে পাকিস্তান।
কোনো ফরম্যাটের বিশ্বকাপের কোন ম্যাচেই এখনো পর্যন্ত ভারতকে হারাতে পারেনি পাকিস্তান।
তবে কী এবার ইতিহাসটা বদলাতে যাচ্ছে?
আত্মবিশ্বাসী পাকিস্তানের কোচ ওয়াকার ইউনুস। তার মতে, ‘এই ম্যাচে ভারতই পিছিয়ে থাকবে। কারণ তারা প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেছে। বিশ্বকাপ থেকেই ছিটকে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে তাদের সামনে। এটা বাড়তি একটা চাপ তৈরি করেছে তাদের ওপর। অন্যদিকে গত ম্যাচটা জিতেছি আমরা। ব্যাটসম্যানরাও রান পেয়েছে। তাই আমাদের দলের খেলোয়াড়রা বেশ আত্মবিশ্বাসী।’
ওয়াকার তার বোলারদের নিয়ে আরো বেশি আত্মবিশ্বাসী। তার দুই অস্ত্র মোহাম্মদ আমির এবং ওয়াহাব রিয়াজ ম্যাচ উইনার।
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের বোলাররাই হচ্ছে এই টুর্নামেন্টে রিয়াল গেম চেঞ্জার। যদিও বুমরাহ এবং নেহরা খুবই প্রতিভাবান বোলার। তবে আমরাই এ ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবো। কারণ আমাদের পেসাররা ১৪৫-১৫০ কিলোমিটার গতিতে বল করতে পারে। মোহাম্মদ আমির এবং ওয়াহাব রিয়াজরা কিন্তু আমাদের সত্যিকারের ম্যাচ উইনার।’
তবে ইতিহাস বলছে ভিন্ন কথা। এখন পর্যন্ত কোন বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে জয়ের স্বাদ পায়নি পাকিস্তান। কিন্তু এমন পরিসংখ্যানকে শুধুই ইতিহাস মনে করেন পাক কোচ। তিনি বলেছেন, 'ইতিহাস বদলাতেই পারে। এবারই তার সেরা সময়। আশা করি এই সুযোগ আমরা কাজে লাগাতে পারব।'

ভারত পাকিস্তান মহা রণ আজ

ভালোবাসার দাম এভাবে চুকাবেন শহীদ আফ্রিদি! কদিন আগেই বলেছেন ভারতের মানুষই তাঁকে বেশি ভালোবাসে। বাংলাদেশ ম্যাচে ইডেনের দর্শকও সেই প্রমাণ দিয়েছে। সেই ইডেনেই আজ ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামবেন আফ্রিদিরা। এ ম্যাচ সামনে রেখে অবশ্য দর্শকদের ভালোবাসার কথা ভুলেই যাচ্ছেন পাকিস্তান অধিনায়ক। ভারতকে ভারতের মাঠেই হারানোর আশা তাঁর।
ভারত-পাকিস্তান মানেই তো ইতিহাস নিয়ে নাড়াচাড়া। কিন্তু এ ম্যাচ ঘিরে সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই আফ্রিদির। অতীত নিয়ে পড়ে না থেকে বরং সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিতে চান। ব্যাট-বলে ভালো করে দলকে জিতিয়ে ইতিহাস পাল্টাতে ব্যাকুল পাকিস্তান অধিনায়ক, ‘আমার পারফরম্যান্স সব সময় গুরুত্বপূর্ণ এবং আমি সব সময়ই ভালো করতে চাই। গত কিছুদিন ভালো খেলেনি। কিন্তু আমি জানি দলের জন্য আমার ভালো খেলা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।’
তবে ইতিহাস পুরোপুরি না এড়িয়ে হার থেকেই প্রেরণা নিতে চান। আফ্রিদির আশা, ‘অতীত নিয়ে কথা বলতে চাই না, আমি অতীত নিয়ে বসেও থাকি না। তবে আমাদের অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হবে। সর্বশেষ ম্যাচে আমরা হেরেছি, তারপরও আমি আত্মবিশ্বাসী কারণ অতীতে ভারতের বিপক্ষে আমরা ভালো করেছি।’
আফ্রিদির এভাবে অতীতকে উড়িয়ে দিতে চাওয়ার পেছনে অবশ্য যুক্তি আছে। লজ্জার ইতিহাস আর কে-ই বা মনে রাখতে চান! ক্রিকেটে ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ অনেক পুরোনো গল্প। যার শুরু থেকে এগিয়ে ছিল পাকিস্তান। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, সব মিলিয়ে ১৩৪ ম্যাচে ৭৩-৫৬ ব্যবধানে এগিয়ে পাকিস্তানই। দলের অবস্থা যাই হোক না কেন, ভারতকে পেলেই জ্বলে উঠত পাকিস্তান। অহমবোধে জেগে ওঠা পাকিস্তান নাস্তানাবুদ করত প্রতিবেশীদের।
এরপরই নাটক জমিয়ে দিতে শুরু করল বিশ্বকাপ। প্রথম চারটি বিশ্বকাপে একবারও দেখা যায়নি ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ। ১৯৯২ বিশ্বকাপে সিডনিতে প্রথম বিশ্বমঞ্চে দুই দলের লড়াই থেকেই শুরু ভারতের আধিপত্য। বিশ্বমঞ্চে (ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি) সব মিলিয়ে ১০ বার মুখোমুখি হয়ে শুধু একটি বাদে প্রতি ম্যাচেই জয়ী দলের নাম ভারত। অন্য ম্যাচেও পাকিস্তান জিততে পারেনি। ২০০৭ বিশ্বকাপের ওই ম্যাচ টাই হওয়ার পর ‘বোওল আউট’— এ হেরেছিল পাকিস্তান।
বিশ্বকাপ মানেই পাকিস্তানের হারের গল্প। তাই ভারতের সঙ্গে আরেকটি বিশ্বকাপ লড়াইয়ের আগে ইতিহাস পাল্টানোর কথা বলতেই হবে আফ্রিদিকে। সূত্র: এএফপি

Wednesday, March 16, 2016

এবারের বিশ্বকাপে সেরা ক্যাচের দাবিদার বাংঙ্গালীর এই অসাধারন ক্যাচ টি

মুস্তাফিজ নেই


আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিষেক হয়েছিল মুস্তাফিজুর রহমানের। নিজের অভিষেক ম্যাচেই দারুণ দৃষ্টি কেড়েছিলেন তিনি। ঘরের মাঠে পরবর্তী সময়ে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে যা করেছিলেন, তা এখন ইতিহাসই বটে।
চোট কাটিয়ে উঠতে না পারায় সেই পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই বিশ্বকাপ মিশন শুরু করা হলো না তাঁর! টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টেনের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ একাদশ করতে হয়েছে মুস্তাফিজকে ছাড়াই।
পাকিস্তানের বিপক্ষে এই ম্যাচের একাদশে আর পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা খুবই কম। অফস্পিনার আরাফত সানি সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশন পরীক্ষা দিয়েছেন। এখনো ফলাফল পাওয়া না গেলেও তাঁর খেলতে অসুবিধা নেই।
কলকাতায় পাকিস্তানের বিপক্ষে এই ম্যাচের আগে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট অনেক হিসাব কষলেও শেষ পর্যন্ত দলে একটাই পরিবর্তন আসতে পারে। তারপরও ইডেন গার্ডেনসের উইকেটের চরিত্র বুঝেই একাদশ গঠন হবে। বিকেল সাড়ে ৩ টায় ম্যাচ শুরুর আগেই জানা যাবে মূলত কারা থাকছেন একাদশে।
পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ :  মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সাব্বির রহমান, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিথুন, আল আমিন হোসেন, তাসকিন আহমেদ ও আরাফাত সানি।

Tuesday, March 15, 2016

বাংলাদেশ কে আটকাতে পাকিস্তানের পরিকল্পনা



পেস বোলিং অ্যাটাককেই পাকিস্তান ক্রিকেটের নির্ভরতার প্রতীক হিসেবে অ্যাখ্যা দিলেন কোচ ওয়াকার ইউনুস। তার মতে, সব ফরম্যাটের ক্রিকেটেই পেস বোলাররা পাকিস্তানকে লড়াইয়ে টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব পালন করেন। একই সাথে এবারের টি-২০ বিশ্বকাপে দেশটির স্পিন অ্যাটাকও প্রয়োজনে ম্যাচ উইনারের ভূমিকা গ্রহণ করতে সক্ষম বলেও দাবি করেন ওয়াকার ইউনুস।
বিশ্বকাপে সুপার টেনের প্রথম ম্যাচে আজ বাংলাদেশের বিপক্ষে লড়বে পাকিস্তান। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি। সম্প্রতি দল দু’টির মধ্যকার এশিয়া কাপের লড়াইয়ে বাংলাদেশের কাছে হেরে কঠোর সমালোচনা হজমও করল পাকিস্তান। ফলে আজ জয়ে মরিয়া হয়েই মাঠে নামবে ওয়াকারের দল। তার জন্য সবচেয়ে বড় সুখবর হচ্ছে বর্তমান পাকিস্তান দলে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পেস অ্যাটাক। বিশ্বকাপের প্রস্তুতিমূলক ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ইডেনের উইকেটে মোহাম্মদ আমের, ওহাব রিয়াজ ও মোহাম্মদ ইফরান সামর্থ্যরে প্রমাণও রাখেন।
বিশ্বকাপের মূল লড়াই শুরুর আগেই পাকিস্তানের পেস অ্যাটাক স্বরূপে উদ্ভাসিত হওয়ার আত্মবিশ্বাসও বেড়ে গেছে কোচ ওয়াকার ইউনুসের। বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের আগে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে পাকিস্তানের কোচ বলেন, ‘অসম্ভব প্রতিভাবান পেস বোলার রয়েছে আমাদের হাতে। তাদের দিনে পাকিস্তান যেকোনো প্রতিপক্ষকেই হারিয়ে দিতে সক্ষম। অতীতেও এটি অহরহ ঘটেছে।’ ভারতের স্লো উইকেটে ম্যাচের ফলাফল গড়ে দিতে স্পিনারদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। তবে এবারের পাকিস্তান দলে স্বীকৃত স্পিনার বলতে কেউই নেই। এর পরও ওয়াকার দাবি করেন, ব্যালান্সড স্পিন অ্যাটাক নিয়েই বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে পাকিস্তান।
ওয়াকার ইউনুস বলেন,‘সাঈদ আজমলকে দলে রাখা সম্ভব হয়নি ফর্মহীনতার কারণে। তবে ভালো একটি স্পিন অ্যাটাকও রয়েছে দলের সাথে।’ ইডেন গার্ডেন্সে বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তানের দাপুটে নৈপুণ্যেই প্রত্যাশা করছেন কোচ ওয়াকার।

Cricket Highlights from India Innings v New Zealand ICC

আজ পাকিস্তান কে হারাতে চায় বাংলাদেশ


শিকারিকে নিয়ে অনিশ্চয়তা। শিকারকে নিয়েও!
সন্ধ্যা নাগাদ দ্বিতীয়টির উত্তর পাওয়া গেলেও প্রথমটি নিয়ে ধাঁধা থেকেই গেল।
সকালে পাকিস্তানের প্র্যাকটিসে নামা দূরে থাক, মাঠেই আসেননি শহীদ আফ্রিদি। জানা গেল, পাকিস্তান অধিনায়ক জ্বরে কাহিল। সেটি না খেলার মতো কি না, এই প্রশ্নটা গুঞ্জরিত হতে হতে ঘণ্টা কয়েকের মধ্যে মিলিয়ে গেল। সন্ধ্যায় পাকিস্তান দলের মিডিয়া ম্যানেজার জানিয়ে দিলেন, আফ্রিদি খেলছেন।
বিকেলে বাংলাদেশের নেটে অনেকক্ষণ বোলিং করলেন মুস্তাফিজুর রহমান। চোটের কারণে ১৪ দিন বিশ্রামে থাকার পর গত পরশু ধর্মশালায় ছোট্ট রানআপে কিছুক্ষণ বোলিং করেছেন। কালও সেভাবেই শুরু। একটু পরই অবশ্য পুরো রানআপে তেড়েফুঁড়ে বোলিং করলেন। মুস্তাফিজ কি তাহলে আজ খেলছেন?
কাল সারা দিন ইডেন গার্ডেনে এটি ‘কোটি টাকার প্রশ্ন’ হয়ে উড়ে বেড়াল। এর আগে কখনো বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটার খেলছেন কি খেলছেন না, এ নিয়ে বিশ্ব মিডিয়ার এমন আগ্রহ কি দেখা গেছে? মনে পড়ছে না।
প্রশ্নের উত্তরটা অবশ্য ম্যাচের আগের রাত পর্যন্তও অজানাই থেকে গেল। মাশরাফি মনেপ্রাণে এই ম্যাচে পেতে চাইছেন মুস্তাফিজকে। কোন অধিনায়কই না তা চাইবে! কিন্তু মুস্তাফিজের ফিটনেস নিয়ে সুনির্দিষ্ট উত্তর নাকি কালকের নেটেও পাওয়া যায়নি। আজ ম্যাচের আগে মাঠে আবার তাঁকে দেখে তার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। সংশয় জাগছে, দল থেকে দেওয়া এই অফিশিয়াল ভাষ্যই সত্যি, নাকি হিথ স্ট্রিকের ওই কথাটা! গত পরশু ধর্মশালায় বিমানে ওঠার আগে বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ ওই যে হাসতে হাসতে বলেছিলেন, ‘মুস্তাফিজ খেললেও আমি তা আগে বলব না। পাকিস্তান ভেবে মরুক না!’ গত এপ্রিলে এই পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতেই বিশ্ব ক্রিকেটে আবির্ভূত হয়েছিলেন ‘বিস্ময় বালক’। শহীদ আফ্রিদি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর প্রথম শিকার। লেখার শুরুতে ‘শিকারি’ ও ‘শিকার’ লেখার অর্থ পরিষ্কার হলো তো! সেই ম্যাচের পর আফ্রিদির সঙ্গে মুস্তাফিজের আর দেখা হয়নি। আজও হবে কি না অনিশ্চিত। হলে তা রোমাঞ্চকরই হবে।
বাংলাদেশের জন্য আসলে এই ম্যাচটাই রোমাঞ্চকর। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর বিশ্বের বড় বড় সব মাঠেই খেলা হয়ে গেছে, অথচ ঘরের পাশে ইডেন গার্ডেনটাই বাদ ছিল। যেখানে বাংলাদেশের সর্বশেষ এবং একমাত্র ম্যাচটি প্রায় ২৬ বছর আগে। ১৯৯০ এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেই ম্যাচ একটা কারণে স্মরণীয়ও হয়ে আছে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে। বাংলাদেশ যে হেরেছিল, এটা উল্লেখ করার মতো কিছু নয়। বড় দলের বিপক্ষে হার-জিত নিয়ে তখন কে মাথা ঘামায়! তার পরও ম্যাচটা স্মরণীয়, কারণ ওই ম্যাচেই বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটার

ওয়ানডেতে প্রথম ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছিলেন।
সেই ক্রিকেটার এখনো ক্রিকেটের সঙ্গেই আছেন। ধারাভাষ্যকার হয়ে। গত পরশু ধর্মশালা থেকে এক দিনের জন্য হংকং উড়ে গেছেন। বেঙ্গালুরু হয়ে আজ কলকাতায় আসার কথা। ধর্মশালা বিমানবন্দরে সেই সুখস্মৃতি রোমন্থন করতে করতে আতহার আলী খান বলছিলেন, ‘আমি লাকি ছিলাম, তাই ওদিন ওটা হয়ে গেছে। এই দল যেভাবে খেলছে, দেখুন না এবার ওরা কী করে ফেলে!’
বাংলাদেশ কিছু একটা করে ফেলতে পারে, এটা শুধু আতহারেরই কথা নয়। এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই এমন একটা রব উঠে গেছে। মাশরাফির সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনা নিয়ে একাধিকবার প্রশ্ন হলো। সেটিও করলেন বিদেশি সাংবাদিকেরা।
আফ্রিদির অনুপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন কোচ ওয়াকার ইউনিস। ম্যাচের আগের দিন প্রতিপক্ষ সম্পর্কে ভালো ভালো কথা বলা মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। সেটি ভুলে গিয়ে ওয়াকার বাংলাদেশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন। এমনও বললেন, শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, এই উত্থান বিশ্ব ক্রিকেটের জন্যও ভালো।
পাকিস্তানের জন্য অবশ্য মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ে নামা একটু কঠিনই। সীমিত ওভারের সর্বশেষ ৫টি ম্যাচেই বাংলাদেশের কাছে হারতে হয়েছে। এর মধ্যে দুটি টি-টোয়েন্টিও আছে। একটা কথা অবশ্য বারবারই বললেন ওয়াকার। এটা বিশ্বকাপ এবং এখানে খেলাটা হবে ভিন্ন কন্ডিশনে। মাশরাফিও যা বিনা বাক্যে মেনে নিচ্ছেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে সাম্প্রতিক রেকর্ডের কথা তুলে যতবারই তাঁকে দিয়ে বাংলাদেশ ফেবারিট বলানোর চেষ্টা হলো, ততবারই তিনি বললেন, ‘ওতে কিছু আসে যায় না। ইতিহাস দেখুন, পাকিস্তান আমাদের চেয়ে অনেক ভালো দল।’
সেই ‘ভালো দল’কে যে হারানো যায়, গত এপ্রিলের আগে সেটিই অজানা ছিল বাংলাদেশের। একবার হারানো শুরু করার পর ছুটে চলা জয়রথ আর থামেনি। মাঠে শেষ পর্যন্ত যা-ই হোক, সুপার টেনে প্রথম প্রতিপক্ষ বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকলে বাংলাদেশ হয়তো পাকিস্তানকেই নিত।
মাশরাফির মতো সাকিবও অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছেন, বিশ্ব ক্রিকেটে অনেক ওলটপালটের মধ্যেও একটা ব্যাপার কখনো বদলায়নি। পাকিস্তান সেই আগের মতোই অননুমেয় দল হয়ে আছে। বিতর্ক যে এই দলের জ্বালানি, এটাও মাশরাফির খুব ভালো জানা। তা বিতর্ক তো এবারও কম হয়নি। এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে আসা নিয়ে নাটক, এরপর শহীদ আফ্রিদির কথা নিয়ে তোলপাড়। সংবাদ সম্মেলনে আফ্রিদি বলেছিলেন, পাকিস্তানের চেয়ে ভারতেই নাকি তিনি বেশি ভালোবাসা পান। যেটিকে ভারতীয় দর্শকদের সমর্থন পাওয়ার জন্য বুদ্ধিদীপ্ত এক চাল বলে আফ্রিদির পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন সুনীল গাভাস্কার।
কিন্তু পাকিস্তানিরা তা মানলে তো! একটা কিছু হলেই ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেওয়ার ‘রীতি’টা শুধু পাকিস্তান ক্রিকেটেই আছে। শহীদ আফ্রিদির বিরুদ্ধেও আদালতে দেশদ্রোহিতার মামলা হয়ে গেছে এরই মধ্যে। ওটা পাকিস্তানিদের সমস্যা, ওরা সামলাক। বাংলাদেশের একটাই চাওয়া, ইডেন যেন আজ ‘মিরপুর’ হয়ে যায়!

বাংলাদেশও হতে পারে চ্যাম্পিয়ন


শচীন টেন্ডুলকারের চোখে ভারত ফেবারিট। কপিল দেব, ব্রায়ান লারাদেরও তা-ই। ভারতের বাইরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শিরোপা জয়ের দৌড়ে বেশির ভাগ বিশ্লেষকের দ্বিতীয় পছন্দ অস্ট্রেলিয়া। যেকোনো বিশ্বকাপের শুরুতেই এমন ‘ফেবারিট-তত্ত্ব’ বেশ আলোচনায় আসে। তবে ইয়ান বোথাম একটু ব্যতিক্রম। সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেটের ‘লটারি’তে কোনো দলকেই এগিয়ে রাখছেন না ইংল্যান্ড কিংবদন্তি। তাঁর চোখে ভারত আর ইংল্যান্ড এখানে একই সারিতে। এখানে অস্ট্রেলিয়ার যতটুকু সম্ভাবনা, ঠিক ততটুকুই সম্ভাবনা দেখছেন বাংলাদেশেরও।
বিশ্বকাপ উপলক্ষে ইংলিশ দৈনিক ডেইলি মিরর-এ নিয়মিত কলাম লিখছেন বোথাম। সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক লেখার শুরুতেই অবশ্য ভবিষ্যদ্বাণীতে নিজের ‘অক্ষমতা’ স্বীকার করে নিয়েছেন, ‘ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় লটারিতে স্বাগত। বিশ্ব টি-টোয়েন্টির বাউন্ডারি উৎসব চমক নিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে। তবে আমার কোনো ধারণাই নেই কে টুর্নামেন্টটা জিতবে। কীভাবে ধারণা থাকবে! এটা কি কেউ বলতে পারে নাকি?’
এই অনিশ্চয়তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ৬০ বছর বয়সী সাবেক বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগের পাঁচ আসর যেমন নাটকীয়তা উপহার দিয়েছে, তাতে কোনো দলকে সরাসরি ফেবারিট বলে দেওয়া আসলেই বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। বোথাম সেই উদাহরণ টেনে এনেই লিখেছেন, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আকাশটা অনেক উন্মুক্ত। কে ভেবেছিল ২০১০ সালে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ জিতবে? ২০১২-তে ওয়েস্ট ইন্ডিজকেই বা কে এগিয়ে রেখেছিল? এখানে কোনো একজন খেলোয়াড়ের ভালো দিন হলেই ম্যাচ জেতা যায়।’
এ কারণেই নিজ দেশকেও শিরোপার ঘোড়দৌড়ে রাখছেন ইংলিশ কিংবদন্তি, ‘ইংল্যান্ডও শিরোপার দাবিদার। তাঁদেরও অন্য যেকোনো দলের মতো সম্ভাবনা আছে। সেই দলটি অস্ট্রেলিয়া হতে পারে, শ্রীলঙ্কা হতে পারে, বাংলাদেশও হতে পারে।’ ডেইলি মিরর।

ভারত তাদের ফাঁদেই ধরা পড়ল


স্পিন ফাঁদ। ঘরের মাঠে ভারতের এই ফাঁদের সঙ্গে ক্রিকেট বিশ্ব পরিচিত। তবে এ ফাঁদে এবার ধরাশায়ী খোদ ভারতই। বিশ্বকাপের মূলপর্বের প্রথম ম্যাচে নিজেদের স্পিন ফাঁদে পড়েই হেরেছে মহেন্দ্র সিং ধোনিরা।
নিউজিল্যান্ডের তিন স্পিনারের ঘূর্ণিতে ১২৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৮.১ ওভারে ৭৯ রানে গুটিয়ে যায় ভারত। হেরেছে ৪৭ রানের বড় ব্যবধানে।
মঙ্গলবার রাতে ভারতের নাগপুরের বিদর্ভ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১২৬ রান করে কিউইরা।
সুপার টেনের উদ্বোধনী ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে স্পিন ফাঁদ পেতেছিল ভারত। পরিকল্পনা অনুযায়ী বোলিং আক্রমণে শুরুতে আনা হলো রবিচন্দ্র অশ্বিনকে।
কিন্তু প্রথম বলেই কিউই ওপেনার মার্টিন গাপটিল ছক্কা মেরে উত্তেজনা ছড়িয়ে দেন। অবশ্য পরের বলে আম্পায়ারের 'ভুল সিদ্ধান্তে' এলবিডাব্লউ'র ফাঁদে পড়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।
পরের ওভারে আশিষ নেহেরার সুইংয়ের ফাঁদে পড়ে হার্দিক পান্ডের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন কলিন মুনরো (৭)। ইনিংসের সপ্তম ওভারে সুরেশ রায়না বলে ধোনির স্টাম্পিংয়ের শিকার হন কেন উইলিয়ামসন (৮)।
দলীয় ৬১ রানের মাথায় টপঅর্ডারের চার উইকেট হারায় কিউইরা। রস টেইলর (১০) রানআউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন। আর জাসপ্রিত বুমরাহ বলে বোল্ড আউট হন কোরি অ্যান্ডারসন (৩৪)। এতে বড় সংগ্রহের স্বপ্ন ফিকে হয়ে যায় কিউইদের।
এরপর ১৭তম ওভারে রবীন্দ্র জাদেজার বলে ধোনির হাতে ধরা পড়েন স্যান্টনার (১৭)। শেষ ওভারে রানআউট হন গ্রান্ট ইলিয়ট (৯)। লুক রঞ্চি ২১ রানে অপরাজিত ছিলেন। নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেটে ১২৬ রান তুলতে সমর্থ হয় নিউজিল্যান্ড।
ভারতের হয়ে অশ্বিন, নেহারা, বুমরাহ, রায়না ও জাদেজা একটি করে উইকেট পান।
এদিন নিউজিল্যান্ডও বেছে নেয় ভারতের স্পিন ফাঁদ। বলে তুলে দেন স্পিনার নাথান ম্যাককালামের হাতে। ওই ওভারেই ফেরেন শেখর ধাওয়ান।
তৃতীয় ওভারে আরেক স্পিনার মিচেল স্যান্টনারের বলে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন রোহিত শর্মা। একই ওভারে বিদায় নেন সুরেশ রায়না। গাপটিলের হাতে ধরা পড়েন তিনি।
ইনিংসের পঞ্চম ওভারে ম্যাককালামের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন যুবরাজ সিং (৪)।
দলীয় ২৬ রানেই টপঅর্ডারের ৪ ব্যাটসম্যানকে হারায় টিম ইন্ডিয়া। এরপর কোহলি-ধোনি জুটি গড়তে চাইলেও সেই জুটি ভেঙে দেন ইশ সোধি। ২৭ বলে ২৩ রান করে উইকেটের পেছনে লুক রঞ্চির হাতে ধরা পড়েন কোহলি।
এরপর দশম ওভারে হার্দিক পান্ডেকে এলবির ফাঁদে ফেলেন স্যান্টনার। দলীয় ৪২ রানের মাথায় ভারতের ৬ ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফেরেন। ১১তম ওভারে জাদেজাকে ফিরিয়ে দেন সোধি।
তখনও ভারতের ভরসা ধোনি-অশ্বিন জুটি। কিন্তু ১৭তম ওভারে সোধি স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন ১০ রান করা অশ্বিনকে। ধোনি ৩০ বলে করেন ৩০ রান। ১৮তম ওভারে বিদায় নেন ভারতের দলপতি।
শেষ পর্যন্ত ১৯তম ওভারে অ্যাডাম মাইনের প্রথম বলে আশিষ নেহরা বোল্ড হয়ে গেলে ৭৯ রানে গুটিয়ে যায় ভারত। এটি টি-টোয়েন্টিতে ভারতের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রান।
মাত্র ১১ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেয়া কিউই স্পিনার মিচেল স্যান্টনার হন ম্যাচসেরা। অপর দুই স্পিনার- ইশ সোধি ১৮ রানে ৩টি আর নাথান ম্যাককালাম ৩ ওভার বল করে ১৫ রানে ২টি উইকেট নেন।

আজ ভারত হারবে


টি২০ বিশ্বকাপ শুরু হতে যাচ্ছে। আর মাত্র অল্প কিছু সময় অপেক্ষা। বাংলাদেশ সময় রাত ৮.০০টায় নাগপুরে বিশ্বজয়ের লক্ষ্যে প্রথম যুদ্ধে নামতে প্রস্তুত ভারত। প্রস্তুত নিউজিল্যান্ডও। তৈরি নাগপুরও। রানের বন্যার জন্য অপেক্ষা করে আছে জামথার বিদর্ভ ক্রিকেট অ্যাশোসিয়েশন স্টেডিয়ামের ২২গজ। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, এই পিচে হেসে খেলে ১৬০ রান উঠবেই। সুপার টেনের প্রথম সুপার ম্যাচ ঘিরে উত্তেজনায় ফুটছে কমলালেবুর শহর। ৫০০ থেকে ৫০০০, সব দামের টিকিটই নিঃশেষিত। তবুও কমছে না হাহাকার! আকাল এতটাই যে, ক্রিকেট কর্তাদের ঝুলিতে পরিজনদের জন্যও টিকিট নেই।
বিশ্বকাপে খেলতে আসার আগে ১১টি টি২০ ম্যাচের মধ্যে ১০টিতেই জিতেছেন কোহলিরা। আইসিসি টি২০ ক্রিকেট র‌্যাঙ্কিয়ে এক নম্বর জায়গাটাও দখলেই। তাই এই মুহূর্তে আত্মবিশ্বাসের কমতি নেই ধোনি বাহিনীর অন্দরমহলে। টিমের ইয়ং ব্রিগেডের জন্য নয়া কৌশল নিয়েছে দলের থিঙ্কট্যাঙ্ক। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ নয়, আজকের খেলাটাকে সাধারণ একটা টি২০ দ্বৈরথ হিসেবেই নাও— নতুনদের মগজের কোণায় কোণায় এখন এই মন্ত্রই পুরে দিতে বদ্ধ পরিকর ধোনিরা।
বুমরাহদের জন্য এটা প্রথম বিশ্বকাপ হলেও, আইপিএল খেলার সুবাদে ২০ ওভারের ম্যাচের হাই টেনশন সামলাতে মোটামুটি তাঁরা ভালই দক্ষ। আর এই আইপিএল ফান্ডাকেই কাজে লাগাতে চাইছেন ক্যাপ্টেন কুল। হার্দিকদের প্রাণপনে বোঝাচ্ছেন, প্রয়োজনের অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক বা রক্ষনাত্মক, কোনওটাই হওয়ার দরকার নেই। বিশ্বকাপের চাপ আরামসে সামলাতে পারবেন নতুনরা— দৃঢ় বিশ্বাস অধিনায়ক, সহ-অধিনায়কের।
নাগপুরে আজ এই আইপিএল মেজাজটাই ধরে রাখতে চাইছেন ক্রিকেট কর্তারাও। আইপিএল-এর মতোই আজকের ম্যাচের জন্য সাজছে মেহফিল। বিশ্বজয়ের ময়দানে প্রাণপনে আইপিএল পরিবেশ তৈরির চেষ্টা কি আসলে রণ কৌশল? হয়তো!
অন্য দিকে, অস্ত্রে কিন্তু শান দিচ্ছে নিউজিল্যান্ডও। ভারতের যদি এক জন কোহলি থাকে, কিউয়িদের কিন্তু এক জন উইলিয়মসন আছেন। এ দিকে সুরেশ রায়না, তো, ও দিকে গাপ্তিল। আছেন ম্যাকালামও। প্রত্যেকেই টি২০ স্পেশালিস্ট। আইপিএল খেলার সুবাদে ভারতের মাটিও তাঁদের ভীষণ চেনা। এবং কিউয়িদের সঙ্গী সেই ইতিহাস। ২০০৭-এর বিশ্বকাপ জয়ী ভারতকে কিন্তু মাথা নত করতে হয়েছিল টিম ধোনিদের। শুধু তাই নয়, টি২০ যুদ্ধে এখনও ওই সাদা-কালো জার্সির কাছ থেকে জয়টা অধরাই রয়ে গিয়েছে পয়লা নম্বরিদের।
কে কাকে পাল্লা দেবে, তার ফয়সলাটা হবে ওই তিন ঘণ্টাতেই, নাগপুরের ২২ গজেই। ইতিহাসের অভিমুখটা কি বদলাবে, নাকি অক্ষয় থাকবে তার মূল গতি? খেলার আগেই উইলিয়ামসন কিন্তু চ্যালেঞ্জটা ছুঁড়ে দিয়েছেন। এই হুঙ্কারের বদলে জয় কি ছিনিয়ে আনতে পারবেন ধাওয়ানরা? জবাবটা পেতে অপেক্ষা মাত্র আর কয়েক ঘণ্টা।
তবে, আজকের দিনটা একটু আলাদা। অন্য বিশ্বকাপের শুরুতের থেকে অন্য রকম। এই প্রথম বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে কোনও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছাড়াই। রণ কৌশল? কে জানে! -

আজকের ম্যাচে ভারত-নিউজিল্যান্ডের সম্ভাব্য একাদশ


ভারত-নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্ব। নাগপুরে রাত আটটায় স্বাগতিক ভারতের মুখোমুখি হবে কিউইরা।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে জয় দিয়েই শুরু করতে চায় স্বাগতিকরা। জয় দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করতে চায় নিউজিল্যান্ডও। বর্তমানে দু-দলই দারুণ ছন্দে রয়েছে। ফলে প্রথম ম্যাচেই কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি পড়তে পারে দুই দলই।
টি-টোয়েন্টি বিশ্ব কাপের প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন ভারত এবার শিরোপার বড় দাবিদার। এর পেছনে যথেষ্ট কারণও রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায়কে ৩-০ তে হোয়াইটওয়াশ, ঘরের মাঠে শ্রীলংকা সিরিজ জয় এবং সর্বশেষ বাংলাদেশ থেকে এশিয়া কাপ (টি-টোয়েন্টি) নিয়ে গেছে ধোনির দল। বোঝাই যাচ্ছে, এই ফরম্যাটে কতটা শক্তিশালি টিম ইন্ডিয়া।
তবে ভারতের ভয় অন্য জায়গায়। কারণ এর আগে টি-টোয়েন্টিতে দুই দলের চারবারের দেখায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি জয়ও পায়নি ধোনি বাহিনী।
এমনকি ২০০৭-এ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও নিউজিল্যান্ডের কাছে হারে ভারত। এছাড়া অনুশীলন ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে চার রানে হারটা কিন্তু ধোনিদের আত্মবিশ্বাসকে একটু হলেও ধাক্কা দিয়েছে।
এদিকে টি-টোয়েন্টিতে ভারতের বিপক্ষে অপরাজিত থাকায় বেশ আত্মবিশ্বাসি কিউইরা। বেশ ফর্মেও রয়েছে দলটি। তবে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম অবসরে চলে যাওয়ায় বড় একটা শূন্যতা তৈরি হয়েছে দলটিতে।
বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ড নেতৃত্বে দিবেন কেন উইলিয়ামসন। সঙ্গে রয়েছেন ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে এক ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের মালিক মার্টিন গাপটিল, রয়েছেন রস টেলর এবং কোরি অ্যান্ডারসনের মতো ব্যাটসম্যানরা।
কিউইদের শেষ পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টির পরিসংখ্যানে দেখা গেছে চারটিতেই জিতেছে উইলিয়ামসনের দল। তবে ভারতীয় কন্ডিশনে বিরাট-রোহিতদের সামনে জিততে অন্যরকম কিছুই করে দেখাতে হবে গাপটিল-টেলরদের। কারণ নাগপুরের বিদর্ভ স্টেডিয়ামে তাদের প্রতিপক্ষ শুধু ধোনিরাই নন আছেন গ্যালারি ভর্তি দর্শকও!
ভারতের সম্ভাব্য একাদশ: এমএস ধোনি (অধিনায়ক), বিরাট কোহলি, শিখর ধাওয়ান, রোহিত শর্মা, যুবরাজ সিং, সুরেশ রায়না, রনিচন্দ্রন অশ্বিন, হারদিক পান্ডে, রবিন্দ্র জাদেজা, আশিষ নেহারা/মোহাম্মদ সামি ও বুমরাহ।
নিউজিল্যান্ডের সম্ভাব্য একাদশ: কেন উইলিয়ামস (অধিনায়ক), মার্টিন গাপটিল, রস টেইলর, কলিন মুনরো, গ্রান্ট ইলিয়ট, লুক রঞ্চি, কোরি অ্যান্ডারসন, মিচেল সান্টার/নাথান ম্যাককুলাম, মিচেল ম্যাকক্লেনাঘান/ অ্যাডম মিলনে, টিম সাউদি ও ট্রেন্ট বোল্ট।

আজ শুরু ২০টি বিশ্বকাপ ভারত বনাম নিউজল্যান্ড


আইসিসি যে বিলবোর্ডগুলো বানিয়ে ভারতের প্রতিটি ভেন্যু শহরে টি২০ বিশ্বকাপের রঙ ছড়াতে চেয়েছে, সেই বোর্ডগুলোতে ক্রিকেট তারকাদের অনেকেরই ছবি আছে। কিন্তু ধর্মশালা থেকে কলকাতা- কোথাও দেখা মেলেনি মাশরাফিদের মুখচ্ছবি! আসলে এগুলো নাকি বানোনোই হয়েছে সুুপার টেনের কথা মাথায় রেখে। আরও পরিষ্কার করলে আজ শুরু হওয়া 'বড়'দের পর্ব নিয়ে! যার পোশাকি নাম সুপার টেন। ঠিক এভাবেই 'ছোট'-'বড়'র লক্ষণরেখা সূক্ষ্মভাবে দেগে রেখেছে আইসিসি। দুর্ভাগ্যজনক হলো, সেখানে টেস্ট খেলুড়ে দেশ হয়েও সেই রেখার 'ছোট' পাড়েই বাংলাদেশকে রেখে দিয়েছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থাটি। আর সে কারণেই টুর্নামেন্টের দু'বছর আগের র‌্যাংকিংকে নিয়ামক ধরে বাংলাদেশকে এই বাছাই পর্ব খেলতে হলো। এশিয়ার রানার্সআপ দলের এভাবে বাছাই পর্ব খেলতে দেখাটা ঠিকই চোখে লেগেছে। কথাগুলো কোনো বাংলাদেশির নয়, ধর্মশালার প্রেসবক্সে দাঁড়িয়ে ইয়ান বিশপই বলছিলেন এক পরিচিত আড্ডায়। তবে কি-না শেষ পর্যন্ত নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েই বাংলাদেশ এই টুর্নামেন্টের সুপার টেনের সদস্যপদ আদায় করে নিয়েছে। ভারতীয় মিডিয়াগুলোতে এখন এমনও বলা হচ্ছে যে, বাছাই পর্ব খেলে বরং বাংলাদেশেরই ম্যাচ প্র্যাকটিসটা ভালো হয়েছে!

বোঝাই যাচ্ছে, এশিয়া কাপের রানারআপ বাংলাদেশকে কতটা সমীহের চোখে দেখা হচ্ছে মূল পর্বে। অবশ্য শুধু তো বাংলাদেশই নয়, অন্য গ্রুপে সুপার টেনে উঠেছে আফগানিস্তানও। বাছাই পর্বে তারা টপকেছে জিম্বাবুয়ের বাধা। এখানে বাংলাদেশের বিজয়কে যতটা না, তার চেয়ে অনেক বেশি চমক হিসেবে দেখা হবে আফগানদের সাফল্যকে। তা আফগানরা চমকে দিতে পারে বৈকি! বাংলাদেশের চেয়ে তাদের গ্রুপটাই বরং সহজ হয়েছে। গ্রুপ-১-এ বর্তমান টি২০ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন শ্রীলংকা, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ডের সঙ্গী আফগানিস্তান। আজ নাগপুরে সুপার টেনের প্রথম লড়াইটা হচ্ছে অবশ্য গ্রুপ-২ থেকে। স্বাগতিক ভারত আছে এই গ্রুপেই। তাদের বিপক্ষে নাগপুরের বিদর্ভ স্টেডিয়ামে খেলবে নিউজিল্যান্ড। এই গ্রুপেই ভারত, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গী মাশরাফির বাংলাদেশ; যে গ্রুপটাকে বাংলাদেশ অধিনায়ক বাছাই পর্ব শুরুর আগে থেকেই বলে আসছেন 'মৃত্যুকূপ'!

আসলে বাছাই রাউন্ড টপকে সুপার টেনের টিকিট নিশ্চিত করাটা একটা চ্যালেঞ্জই ছিল বাংলাদেশের জন্য। একটা সম্মানের প্রশ্ন ছিল এর সঙ্গে জড়িয়ে। যা কখনও মুখে বলেননি মাশরাফি, কিন্তু অনুভব করেছেন। ভয় ছিল তার প্রতিপক্ষ নিয়ে নয়, ধর্মশালার কন্ডিশন নিয়ে। এশিয়া কাপ খেলেই ভিন্ন এক পরিবেশে এসে খেলতে হয়েছে তাদের। তার ওপর সানি-তাসকিনকে নিয়ে কী হয় কী হয় একটা ভাবনা! শেষ পর্যন্ত সুপার টেনের টিকিট পকেটে ভরে দুশ্চিন্তামুক্ত বাংলাদেশ অধিনায়ক। 'একধরনের রিলিফ বলতে পারেন, চ্যালেঞ্জটা কম ছিল না। নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে প্রথম ম্যাচটি কঠিন ছিল। আসলে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে আমাদের কিছু সময় লেগেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সবকিছু ভালোভাবেই হয়েছে। এখন পরের রাউন্ডের জন্য প্রস্তুত আমরা।' কলকাতা রওনা দেওয়ার আগে ধর্মশালা থেকেই বড়মঞ্চের লড়াইয়ের আভাস দিয়ে রেখেছেন মাশরাফি।

এ দিন দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে ধর্মশালা থেকে দিলি্লর বিমানে উঠে বাংলাদেশ দল। সেখান থেকে মাশরাফিরা কলকাতার উড়ানে উঠলেও তাসকিন যান অন্য রুটে। হিথ স্ট্রিককে সঙ্গে নিয়ে তাসকিন তার বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দিতে যান চেন্নাই। সন্ধ্যায় কলকাতা পেঁৗছেন মাশরাফিরা। ঘণ্টা ছয়েকের এই ভ্রমণপথে ভিন্ন ধরনের এক অভিজ্ঞতা হয়েছে টাইগারদের। দিলি্ল বিমানবন্দরে সেলফি শিকারি সেখানকার নিরাপত্তাকর্মীরাও। বাংলাদেশ দলকে দেখেই তাদের সুপার টেনের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছে আমভারতীয়। কলকাতায় নেমে তো পাশের বাড়ির ছেলের আদর। আজ বাদে কাল এখানেই সুপার টেনের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এর পর ২১ মার্চ অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ব্যাঙ্গালুরুতে, একই ভেন্যুতে ২৩ মার্চ স্বাগতিক ভারতের সঙ্গে। আর ২৬ মার্চ কলকাতায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নামছে মাশরাফিরা। এরই মধ্যে আইসিসির অফিসিয়াল ব্রডকাস্টার স্টার স্পোর্টসের বিশেষ অ্যাসাইনমেন্ট পড়েছে টি২০-তে বদলে যাওয়া এই বাংলাদেশকে নিয়ে বিশেষ একটি অনুষ্ঠান তৈরির। কোচ হাথুরু, সাকিব, তামিমকে নিয়ে তাই আলাদা আলাদা সেশন চলছে। যার কিছুটা হয়েছে ধর্মশালায়, বাকিটা হবে কলকাতায়।

প্রথম রাউন্ডে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয়ের পরই প্রায় নিশ্চিত হওয়া যায় সুপার টেনে খেলছেন মাশরাফিরা। কিন্তু তার পরও সরকারি হিসাব বলে কথা, আইসিসি মাশরাফিদের জন্য কলকাতা থেকে ব্যাঙ্গালুুরুর উড়ান নিশ্চিত করতে পারছিল না। কোনো কারণে ওই রাউন্ডে পা হড়কে গেলেই হয়তো আজ কলকাতার এই উড়ান দিলি্ল থেকে ঢাকাতেই ফিরে যেত। তবে আইসিসি কর্মকর্তাদের এখন দৌড়ঝাঁপ দেখে মনে হচ্ছে- সুপার টেনের মঞ্চ যেন মাশরাফিদের জন্যই অপেক্ষা করে ছিল। সেখানে টি২০ ক্রিকেটের কুলীন সমাজ এখন সরকারিভাবেই স্বাগত জানাচ্ছে বাংলাদেশকে।

Monday, March 14, 2016

আকরাম যা বললেন তামিমের ব্যাপারে


তামিম ইকবালের ব্যাটে খারাপ হাওয়া ভর করলে সেটার ঝাপটা আকরাম খানের ওপর দিয়েও কিছুটা যায়। তিনি তামিমের চাচা, আবার ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালকও। তামিম খেলছেন চাচার প্রভাবে, এমন একটা সমীকরণ তাই সহজেই তৈরি করে নিতে পারেন ‘অবুঝ ক্রিকেটপ্রেমী’রা।
তাহলে তামিম ভালো খেললে সেটির কৃতিত্বও কি কিছুটা পাওয়া উচিত নয় আকরামের? তিনি ‘প্রভাব’ না খাটালে যে তামিম এত দিন দলেই থাকতেন না! কাল মুঠোফোনে রসিকতাটা করতেই কলকাতা থেকে হেসে উঠলেন আকরাম। তবে ওই প্রসঙ্গে একেবারেই না গিয়ে খাঁটি ক্রিকেট পরিচালনা প্রধানের মতো বললেন, ‘সব খেলোয়াড়ই আমার কাছে সমান। কেউ কমবেশি নয়। তবে তামিমকে অভিনন্দন জানাই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম সেঞ্চুরি করায়।’
আকরামের কাছে তামিমের এই সেঞ্চুরির অন্য একটা মাহাত্ম্য আছে। তিনি এখন দ্বিধাহীন কণ্ঠে বলতে পারছেন, ‘ও প্রমাণ করল, এ রকম কোনো ক্রিকেট নেই যেটা সে খেলতে পারে না। তামিম এখন পরিপূর্ণ ব্যাটসম্যান। ক্রিকেটটা শুদ্ধভাবে খেলতে শিখে গেছে।’ তামিমকে এই ‘স্বীকৃতি’ শুধু ওমানের বিপক্ষে করা ঝোড়ো সেঞ্চুরি দেখেই দিচ্ছেন না আকরাম, তাঁর চোখে বরং ভ্রাতুষ্পুত্রের হল্যান্ড ম্যাচে খেলা অপরাজিত ৮৩ রানের ইনিংসই বেশি মর্যাদা পাচ্ছে, ‘আমার মনে হয়, ওই ইনিংসটাই বেশি ভালো ছিল। সেঞ্চুরি অনেক বড় অর্জন। তবে সেদিনের ইনিংসটা অনেক বুদ্ধিদীপ্ত ছিল।’
এবারের এশিয়া কাপের আগেও বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে দুর্বল জায়গা বলা হতো টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে। সেই এশিয়া কাপেও তামিম দুই ম্যাচ খেলে রান পাননি। অথচ বিশ্বকাপে কিনা তাঁর ব্যাটই ছড়াচ্ছে হাজার বাতির রোশনাই! বাকিদের সঙ্গে কোথায় তৈরি হলো ব্যবধান? আকরামের বিশ্লেষণ, ‘ও খুব দ্রুত শিখতে পারে। এটাই তাকে এগিয়ে দিয়েছে।’
দলের সঙ্গে আকরামও এখন ভারতে। ধর্মশালা থেকে দিল্লি হয়ে গতকাল সন্ধ্যায় কলকাতা পৌঁছেছেন। পরশু রাতে খেলার পর সময় হয়নি, কালও দিল্লি-কলকাতা করে তামিমের সাফল্যটা সেভাবে উদ্যাপন করতে পারেনি দল। তামিমের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলা হয়নি আকরামেরও। তবে আকরামের হয়ে কাজটা করে দিয়েছেন তাঁর স্ত্রী সাবিনা আকরাম। ফেসবুকে বেশ কয়েক লাইনের এক স্ট্যাটাসে পরশু রাতেই তামিমকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, ‘তুমি বাবা হওয়ার পর থেকে দোয়া করছিলাম যাতে একটা ১০০ করো। কারণ, তোমার বাবা হওয়ার মিষ্টি বাংলাদেশের সব মানুষকে খাওয়ানো সম্ভব নয়। আজকের (পরশু) এই শতক দিয়ে তুমি দেশের সব মানুষের মুখে হাসি এনে দিয়েছ। তুমি যেন সব সময় দেশের মানুষকে এভাবে খুশি করতে পারো, আল্লাহ পাকের কাছে এই-ই প্রার্থনা।’
আকরামের দুহাত অবশ্য শুধু তামিমের জন্য প্রার্থনাতেই প্রসারিত নয়। তাঁর চিন্তাজুড়ে পুরো বাংলাদেশ দল এবং সুপার টেনের ম্যাচগুলো। পরশুর ম্যাচে সাকিব আল হাসানকে ব্যাট হাতে সপ্রতিভ দেখে ভালো লেগেছে আকরামের। তাঁর চাওয়া এখন একটাই, ‘মুশফিক এবার রানে ফিরলেই হয়। সুপার টেনে সেটা দরকারও। বড় দলগুলোর পক্ষে তো এক-দুজনের পক্ষে ম্যাচ জেতানো সম্ভব হবে না। সবাইকে ভালো খেলতে হবে।’
সুপার টেন তাহলে হয়ে উঠুক বাংলাদেশেরই একটি পরিপূর্ণ দল হয়ে ওঠার মঞ্চ।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০১৬ এর সময়সূচি


গ্রুপ – ১ ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আফগানিস্তান
গ্রুপ – ২ বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড
তারিখ ম্যাচ ভেন্যু বাংলাদেশ সময়
১৫ মার্চ ভারত–নিউজিল্যান্ড নাগপুর রাত ৮টা
১৬ মার্চ বাংলাদেশ-পাকিস্তান কলকাতা বেলা ৩–৩০ মি
ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ মুম্বাই রাত ৮টা
১৭ মার্চ শ্রীলঙ্কা–আফগানিস্তান কলকাতা রাত ৮টা
১৮ মার্চ অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ধর্মশালা বেলা ৩–৩০ মি
ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা মুম্বাই রাত ৮টা
১৯ মার্চ ভারত-পাকিস্তান কলকাতা রাত ৮টা
২০ মার্চ দক্ষিণ আফ্রিকা-আফগানিস্তান মুম্বাই বেলা ৩–৩০ মি
শ্রীলঙ্কা–ওয়েস্ট ইন্ডিজ বেঙ্গালুরু রাত ৮টা
২১ মার্চ বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া বেঙ্গালুরু রাত ৮টা
২২ মার্চ পাকিস্তান–নিউজিল্যান্ড মোহালি রাত ৮টা
২৩ মার্চ ইংল্যান্ড-আফগানিস্তান দিল্লি বেলা ৩–৩০ মি
বাংলাদেশ-ভারত বেঙ্গালুরু রাত ৮টা
২৫ মার্চ অস্ট্রেলিয়া–পাকিস্তান মোহালি বেলা ৩–৩০ মি
দক্ষিণ আফ্রিকা–ওয়েস্ট ইন্ডিজ নাগপুর রাত ৮টা
২৬ মার্চ বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড কলকাতা বেলা ৩–৩০ মি
ইংল্যান্ড–শ্রীলঙ্কা দিল্লি রাত ৮টা
২৭ মার্চ ওয়েস্ট ইন্ডিজ–আফগানিস্তান নাগপুর বেলা ৩–৩০ মি
ভারত–অস্ট্রেলিয়া মোহালি রাত ৮টা
২৮ মার্চ দক্ষিণ আফ্রিকা-শ্রীলঙ্কা দিল্লি রাত ৮টা

সেমিফাইনাল

৩০ মার্চ* প্রথম সেমিফাইনাল (১ম গ্রুপ–২: ২য় গ্রুপ–১) দিল্লি সন্ধ্যা ৭–৩০ মি
৩১ মার্চ* দ্বিতীয় সেমিফাইনাল (১ম গ্রুপ–১: ২য় গ্রুপ–২) মুম্বাই সন্ধ্যা ৭–৩০ মি

ফাইনাল
৩ এপ্রিল ফাইনাল কলকাতা সন্ধ্যা ৭–৩০ মি

Sunday, March 13, 2016

পাকিস্তানের ঘাম ঝরানো প্রস্ততি

টুয়েন্টি টুয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপকে সামনে রেখে গতকাল ভারতে পৌঁছেছে পাকিস্তান ক্রিকেট দল। আর রোববার কোলকাতার ইডেন গার্ডেনে অনুশীলন করল তারা। ১৬ মার্চ ও ১৯ মার্চ চিরপ্রতিন্দ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে ম্যাচকে সামনে রেখেই অনুশীলনে নেমে পড়ল আফ্রিদির দল। দু’টি ম্যাচই অনুষ্ঠিত হবে কোলকাতায়। ১৬ মার্চ পাকিস্তানের প্রতিপক্ষকে হবে তা এখনো ঠিক হয়নি। প্রথম রাউন্ডে ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়নের বিপক্ষে খেলবে পাকিস্তান। প্রতিপক্ষ হতে পারে বাংলাদেশ বা ওমান।
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের ভেন্যু ছিল ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট এসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে সেখান থেকে ম্যাচটি সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ফলে আগামী ১৯ মার্চ কোলকাতায় খেলবে দু’দল। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে কোলাতায় ১৬ মার্চ সুপার টেনে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলবে পাকিস্তান।
তাই কোলকাতার দু’টি ম্যাচকে সামনে রেখে বেশ জোড়েসোড়েই অনুশীলন শুরু করেছে পাকিস্তান। অনুশীলনের প্রথম দিনে নেটে অনেক বেশি সময় কাটিয়েছে দলের ব্যাটসম্যানরা। কারণ সম্প্রতি সময়ে ব্যাটসম্যানরাই বাজে ফর্ম প্রদর্শন করছেন। তাতে ম্যাচ হারের স্বাদটা পেতে হচ্ছে পাকিস্তানকে। তার প্রমান সদ্য শেষ হওয়া টি-২০ এশিয়া কাপ। লীগ পর্ব থেকেই বিদায় নেয় তারা।
চলমান টি-২০ বিশ্বকাপে ভালো পারফরমেন্স করাই এখন পাকিস্তানের লক্ষ্য। তবে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে তারা। কারণ বিশ্বকাপেই ভারতের বিপক্ষে কখনো জিততে পারেনি পাকিস্তান। অবশ্য এবারের খেলাটি কোলকাতায়। আর এখানেই ভারতের বিপক্ষে সবগুলো ম্যাচ জিতেছে পাকিস্তান। কিন্ত এবারো কি তারা সফল হবে?

ছেটরা অবহেলিত কেন? আইসিসি

 প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে ৮ রানে হেরে গেলেও পরের দুটি ম্যাচে ভালো করে সুপার টেনেই উঠতে চেয়েছিল হল্যান্ড। কিন্তু বৃষ্টির কারণে ওমানের বিপক্ষে ম্যাচটি বাতিল হয়ে যাওয়ায় ডাচদের এখন দেশে ফেরার প্রস্তুতিই নিতে হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি হতাশার সুরে বললেন, ‘আমাদের সময়, উদ্যম, পরিশ্রম সবকিছুই বিফলে গেল। আমাদের এখন অপেক্ষা করতে হবে আরও চার বছর!’

একই অবস্থা আয়ারল্যান্ডের। একই অবস্থা ওমান, আফগানিস্তান, হংকং—বিশ্ব ক্রিকেটের সব উদীয়মান শক্তিরই। এই দেশগুলো ভালো ক্রিকেট খেলে, বাহবা পায়, টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোকে মাঝে-মধ্যে ভীতির মধ্যে ফেলে দেয়, কিন্তু নিজেদের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে পারে না। একটা জায়গায় এসে থেমে যায় এই দেশগুলোর অগ্রযাত্রা। একটা নির্দিষ্ট গণ্ডির ঘেরাটোপে পড়ে খাবি খেতে হয় নিরন্তর।

সবাই বলেন, এটা নাকি বিশ্বায়নের কাল। গোটা দুনিয়া একটা বৈশ্বিক গ্রাম। কিন্তু প্রসঙ্গটা যখন ক্রিকেট, এসব বাক্সবন্দী আপ্তবাক্যই মনে হয়। ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির বদনাম আছে আগে থেকেই। পৃথিবীর প্রতিটি খেলাই যেখানে তাদের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়িয়ে গেছে, সেখানে ক্রিকেট হেঁটেছে সম্পূর্ণ উল্টোপথে। ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় ওয়ানডে বিশ্বকাপ ১০ দলে সীমাবদ্ধ করে ফেলার পর আইসিসির সমালোচনা কিন্তু কম হয়নি।
হল্যান্ড,আয়ারল্যান্ড, আফগানিস্তান, হংকং, ওমান, আরব আমিরাত কিংবা নেপালের মতো দেশগুলো বিভিন্ন সময় আইসিসির বৈশ্বিক প্রতিযোগিতাগুলোতে খেলেছে। হল্যান্ড-আরব আমিরাত তো বিশ্বকাপ খেলেছে আজ থেকে ১৯ বছর আগেই। আফগানিস্তান সাম্প্রতিককালে ক্রিকেট দুনিয়ায় প্রশংসা পেলেও এই দেশগুলো কেন যেন ক্রিকেটে এগিয়ে যেতে পারছে না। ক্রিকেটে এক সময় সাড়া জাগানো সহযোগী সদস্য দেশ কেনিয়া তো এখন ক্রিকেট দুনিয়ায় প্রায় বিস্মৃত এক নামই।

এই দেশগুলো কেন এগিয়ে যেতে পারছে না, এই আলোচনায় হল্যান্ড অধিনায়কের কালকের মন্তব্য টেনে আনতেই হচ্ছে.... ‘আমাদের আরও অপেক্ষা বাড়ল।’ কোনো বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা থেকে কোনো সহযোগী সদস্য রাষ্ট্রের বিদায়ের পর অপেক্ষার পালাটা যে দীর্ঘ, সেটা তো নতুন করে বলে বোঝানোর দরকার নেই। সহযোগী সদস্য দেশগুলোর অংশগ্রহণ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এতটাই কম যে এদের দীর্ঘ অপেক্ষা ছাড়া গতিও নেই। এই জায়গাটাতে আইসিসি আসলে কী করছে, সেই প্রশ্ন করাই যায়।

যেকোনো খেলাতেই শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে নিয়মিত খেলার সুযোগ না পেলে উন্নতি করা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এই জায়গায় বাংলাদেশ ও কেনিয়াকে মুখোমুখি দাঁড় করালেই যুক্তি খুঁজে পাওয়া যায়। ১৯৯৭ আইসিসি ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ হয়ে এই দুটো দেশ ক্রিকেটের বৈশ্বিক পরিসরে পা রাখলেও দুই দেশের উন্নতির ধারা কিন্তু এক নয়। কয়েকজন দুর্দান্ত ক্রিকেটার থাকায় কেনিয়া হয়তো মাঝখানে বেশ ভালো করেছে, কিন্তু ধীরলয়ে হলেও উন্নতির গ্রাফটা কিন্তু ধারাবাহিকতার সঙ্গে ওপরের দিকে নিয়ে গেছে বাংলাদেশই। এর একমাত্র কারণ নিয়মিত খেলা। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে দুটি দেশ একসঙ্গে খেললেও ২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদা বাংলাদেশের সুযোগ বাড়িয়ে দিয়েছে। এই জায়গাটাতেই ঘাটতি ছিল কেনিয়ার। এই মুহূর্তে একসময় প্রায় সমশক্তির এই দুটি দেশের অবস্থান ভাবুন, পরিষ্কার দেখা যাবে বড় দলগুলোর বিপক্ষে নিয়মিত খেলার পরিমাণের পার্থক্য অবস্থানেরও পার্থক্য তৈরি করেছে কেনিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে।

হল্যান্ড-আয়ারল্যান্ড-আফগানিস্তান কিংবা হংকং-আরব আমিরাত-ওমান-নেপাল প্রভৃতি দেশও কেনিয়ার ঝুঁকিতে আছে। এই দেশগুলো নিজেদের মধ্যে প্রচুর ক্রিকেট খেললেও বড় দলগুলোর সঙ্গে এদের খেলার সুযোগ নেই বললেই চলে। যে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এরা বড় দলগুলোর বিপক্ষে মাঠে নামার সুযোগ পেতো, সেই প্রতিযোগিতাগুলো সংকোচনের মাধ্যমে সহযোগী সদস্য দেশগুলোকে আরও বঞ্চিত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে আইসিসি। সহযোগী সদস্যদেশগুলোর সঙ্গে নিচের সারির টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর শক্তির পার্থক্য বেশি, তাই অদূর ভবিষ্যতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে আদৌ কোনো সহযোগী দেশ খেলার সুযোগ পাবে কি না, সেই শঙ্কাটা থেকেই যায়।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও কৌশলে এই দেশগুলোকে আলাদা করে ফেলা হয়েছে। র‍্যাংকিংয়ের ধোঁয়া তুলে এই প্রতিযোগিতায় এদের অংশগ্রহণ একটা জায়গায় বন্দী করে ফেলা হয়েছে। হল্যান্ড-আয়ারল্যান্ড কিংবা হংকংয়ের এখানে অস্ট্রেলিয়া-ভারতের মতো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলার সুযোগ নেই বললেই চলে। এমন পরিস্থিতিতে হল্যান্ডের অধিনায়কের দু:খ হবে , সেটা তো জানাই।

সুপার টেনে বাংলাদেশ কখন কাদের সাথে খেলবে


২০টি খেলায় বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম সেঞ্চুরি তামিমের

ফ্রেড ট্রুম্যানের অমর ওই কথাটা কি কোথাও শুনেছেন তামিম ইকবাল! নাকি সাবেক ইংল্যান্ড ফাস্ট বোলারের সঙ্গে বাংলাদেশের বাঁহাতি ওপেনারের কথা মিলে যাওয়া নেহাতই কাকতালীয়?
টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম বোলার হিসেবে ৩০০ উইকেট নেওয়ার পর ট্রুম্যান বলেছিলেন, যে-ই এই রেকর্ড ভাঙুক, সে হবে খুব ক্লান্ত। ইংরেজিতে বললে ট্রুম্যানের কথা বলার ধরনটা বুঝতে সুবিধা হবে, ‘হুএভার ব্রেকস দিস রেকর্ড, হি উইল বি ব্লাডি টায়ার্ড।’
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম সেঞ্চুরি অবশ্যই ইতিহাস। তবে তামিমের মুকুটে তা আরেকটি নতুন পালক মাত্র। সবচেয়ে গর্ব করার মতো কীর্তিটি তো হয়ে গেছে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আগের ম্যাচেই। টেস্ট ও ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে বেশি রান আগে থেকেই তাঁর। টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ডটিও সেদিন কেড়ে নিয়েছেন সাকিবের কাছ থেকে। ক্রিকেটের তিন সংস্করণেই বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ইনিংসও তাঁর ব্যাট থেকেই।
বাংলাদেশের ব্যাটিং রেকর্ডে এই যে একচ্ছত্র আধিপত্য, এটি কেমন লাগে তামিমের? এই প্রশ্নের উত্তরেই ট্রুম্যানকে মনে করিয়ে দিলেন তামিম, ‘আমি রেকর্ডগুলোকে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই, যাতে যে-ই ভাঙুক, তার যেন খুব কষ্ট হয়।’
রেকর্ড হয়ই ভেঙে যাওয়ার জন্য। তাঁর রেকর্ডও যে অমর হয়ে থাকবে না, তামিমও তা জানেন। তবে তা ভেঙে যাওয়ার দিনটি ভেবে যত না মন খারাপ হয়, তার চেয়ে রোমাঞ্চিত হন অন্য একটা কথা ভেবে, ‘আমি আরও ৫/৭/৮ বছর যা-ই খেলি না কেন, রেকর্ডটা ভাঙা যেন কঠিন হয়, তা নিশ্চিত করে যাব। একদিন যখন তা ভাঙবে, বাংলাদেশ তখন অন্য রকম দল হয়ে যাবে।’
রেকর্ড ভাঙে, কিন্তু কিছু কীর্তি অনন্যই থেকে যায়। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম সেঞ্চুরি যেমন আর কেউ করতে পারবে না। সেই সেঞ্চুরির কথা নাকি তামিমের প্রথম মাথায় এসেছে ৮৮ থেকে ছক্কা মেরে ৯৪ রানে পৌঁছানোর পর, ‘এর আগ পর্যন্ত সেঞ্চুরির কথা ভাবিইনি। তখন মনে হলো, হতে পারে।’
সেই সেঞ্চুরির পর উদ্যাপনের ব্যাখ্যা দুই ইনিংসের বিরতিতেই দিয়েছেন। সেটিই বললেন আবারও, ‘একদিন কথা হচ্ছিল, টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরি কে করবে। আমি কোচকে বলেছিলাম, আমিই করব।’ এরপরই হাসি দিয়ে যোগ করলেন, ‘এমন অনেক ওয়াদাই তো করি, সব তো রাখতে পারি না। এটা পেরেছি, এই আর কী!’
সেঞ্চুরির আগেই আরেকটি ক্ষেত্রেও ‘প্রথম’ হয়ে গেছেন। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম এক হাজার রান। সাকিবের সঙ্গে একটা প্রতিযোগিতা ছিল। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচেই ছাড়িয়ে গেছেন সাকিবকে। কাল ‘হাজার’ ছুঁয়ে আরও অনেকটা দূর। এর আগে ওয়ানডেতে প্রথম চার হাজার রানের মাইলফলক ছুঁতেও দুজন এমন গায়ে গায়ে দৌড়েছিলেন। সেটি তামিমের ভালোই মনে আছে, ‘ওয়ানডেতে ও আমার আগে চার হাজার করেছিল। এবার আমি আগে করেছি। ভালো তো লাগছেই।’
বাছাই পর্বের বাধা ভালোভাবেই উতরানো গেছে। এবার আরও বড় পরীক্ষা। গত কিছুদিন তামিমের যে স্বপ্নযাত্রা, তাতে বড় মঞ্চে দাঁড়াতে মুখিয়ে থাকাটাই স্বাভাবিক। এই সেঞ্চুরির আনন্দ ধর্মশালাতেই রেখে গিয়ে নতুন লক্ষ্য ঠিক করার সময় এখন। ওমানের বিপক্ষে ম্যাচ শেষ হতে না হতেই তা করতে শুরুও করে দিয়েছেন, ‘আমরা এখন আরও বড় একটা মঞ্চে। দুদিনের মধ্যে বড় একটা দলের মুখোমুখি হতে হবে। ওই ম্যাচেও অবদান রাখতে চাই।’

তামিমের ব্যাটিং তান্ডব বাংলাদেশের বিশাল জয়

কোচ হাথুরুসিংহেকে কথা দিয়েছিলেন, এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাঁকে একটা সেঞ্চুরি উপহার দেবেন। কথা রাখলেন তামিম ইকবাল।
কদিন আগে যে বাবা হলেন, ছেলেকে উপহার দেওয়ার কোনো তাড়না ছিল না? ওটা সম্ভবত ভাবতেই চাননি। সন্তানের মুখ দেখার পর এশিয়া কাপে খেলতে ব্যাংকক থেকে যেদিন দেশে ফিরলেন, প্রসঙ্গটা তুলতেই যেন আঁতকে উঠেছিলেন, ‘না, না, এমন কিছু ভাবতেই চাই না। আগে থেকে ভাবলে আমার আর তা হয় না। একবার রাতে স্বপ্ন দেখলাম, আমি ডাবল সেঞ্চুরি করছি, ট্রিপল সেঞ্চুরি করছি। পরদিন চেয়ে চেয়ে দেখলাম, সাঙ্গাকারা ট্রিপল সেঞ্চুরি করে ফেলল!’
স্ট্রোক প্লের মতো তামিমের উদ্যাপনও দেখার মতো। ব্যতিক্রমী কিছু না কিছু থাকবেই। ব্যাট-হেলমেট রেখে শূন্যে লাফিয়ে ওঠাটা অনুমিতই ছিল। এরপর যা করলেন, সেটিতে যথারীতি নতুনত্ব। হাথুরুসিংহের টাক মাথা বোঝাতে চুলে হাত বোলালেন। কোচকে মনে করিয়ে দিলেন, তোমাকে বলেছিলাম না!
৬০ বলে সেঞ্চুরি আর ৬৩ বলে অপরাজিত ১০৩ রানের ইনিংস এটাও কি মনে করিয়ে দেয়নি, একটু খারাপ সময় এলেই যেভাবে তাঁর দিকে সমালোচনার তির ছোটে, তা বড় অন্যায়। তামিম ইকবাল বাংলাদেশের ক্রিকেটে এক আশীর্বাদের নাম।
ওমানের বিপক্ষে নকআউটে পরিণত ম্যাচে অস্বস্তিকর শুরুটা যে অমন হাওয়ায় উড়ে গেল, সে তো তামিমের সৌজন্যেই। সৌম্য সরকারকে যিনি মনে করেন ‘বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ’। হয়তো তা-ই। তবে এই ম্যাচে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রায় অন্ধকার করে দিতে যাচ্ছিলেন এই বাঁহাতি ওপেনার। ২২ বলে ১২ রান, স্ট্রাইক রেট মাত্র ৫৪.৫৪। ৬ ওভারের পাওয়ার প্লেতে স্কোরবোর্ডে যে মাত্র ২৯ রান, সেটির মূলেও ধুঁকতে থাকা সৌম্য। এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগের দুই ম্যাচে তো বটেই, মাত্র দেশে খেলে আসা এশিয়া কাপে প্রবলতর প্রতিপক্ষের
টানা পঞ্চম ম্যাচে মাশরাফির টস হেরে বসাটা তখন বিরাট তাৎপর্য নিয়ে দেখা দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। বৃষ্টির কারণে হল্যান্ড-আয়ারল্যান্ড ম্যাচটি টোয়েন্টি-টোয়েন্টি থেকে সিক্স-সিক্স হয়ে গেছে। এই ম্যাচ শুরুর সময়ও বৃষ্টির চোখরাঙানি। প্রথমে ব্যাটিং করা মানেই অনিশ্চয়তার আবর্তে ডুবে যাওয়া। তার ওপর এমন দুঃস্বপ্নের শুরু!
সেখান থেকে ২০ ওভার শেষে ১৮০। প্রথমে ব্যাট করে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। ওমানের ইনিংসে মাঠকর্মীদের সঙ্গে বৃষ্টির অমন রসিকতায় মেতে ওঠাটা তাই বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমেও রসিকতার বিষয়ই হয়ে থাকল। দুশ্চিন্তার নয়।
প্রথম বৃষ্টি-বিরতি ৭ ওভার পর। ওমানের স্কোর তখন ২ উইকেটে ৪১। ডাকওয়ার্থ-লুইসের হিসাবে পার স্কোর থেকে ১৯ রান পিছিয়ে। তার মানে, সেখানেই খেলা শেষ হয়ে গেলে বাংলাদেশ ১৯ রানে জিতত। আবারও দুবার বিরতি পড়ল এরপর। ১৬ ওভারে ১৫২ রানের নতুন লক্ষ্য নিয়ে ওমান আবার ব্যাটিংয়ে নামার ১.২ ওভার পরই আবারও বৃষ্টি। স্কোর তখন ৪ উইকেটে ৪৫। খেলার জন্যই খেলা হচ্ছে, এটি অনেক আগেই পরিষ্কার। আবারও বৃষ্টি, আবারও নতুন লক্ষ্য—এবার ১২ ওভারে ১২০। যার মানে ২২ বলে ৭৫ রান করতে হবে ওমানকে।
সমীকরণটা এমন অসম্ভব থেকে আরও অসম্ভব বানিয়ে দেওয়ার মূলেও তো তামিমের ওই ইনিংস। শেষ ১০ ওভারে বাংলাদেশ তুলেছে ১১০ রান, এর ৬৬-ই তাঁর অবদান। এর আগে দুবার আশির ঘরে অপরাজিত থেকে সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে ফিরেছেন। কাল ১৭তম ওভারেই সেই আশঙ্কা শেষ। তামিম ৮৬ রানে অপরাজিত। আউট হয়ে গেলে ভিন্ন কথা, নইলে সেঞ্চুরি না হওয়ার কোনো কারণই নেই। প্রথম বলে ২ রান নিলেন, পরের বলে রান নেই, তৃতীয় বলে ৬, পরের দুই বলে ২ আর ১ রান নিয়ে তামিম অপরাজিত ৯৭। পরের ওভারের প্রথম তিনটি বল যে ‘ডট’ দিলেন, মনে হয় না সেটি বোলিংয়ের গুণে। বোলিং নয়, তামিম তখন খেলছেন ইতিহাসের বিপক্ষে!
পরের বলে এক্সট্রা কাভার দিয়ে মারা চারে নতুন ইতিহাস। তামিমের কথা বলতে বলতেই তো দেখি ম্যাচ রিপোর্ট শেষ! এর বাইরে বলার মতো আর আছেই বা কী! আছে, সাব্বির রহমানের কথা একটু না বলাটা অন্যায় হবে। ২৬ বলে করেছেন ৪৪ রান। তামিমের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ১০.৫৮ রানরেটে ৯৭ রানের জুটি। অমন শামুকের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া সূচনাটা তো এ কারণেই গায়ে লাগল না।
সাকিবের কথাও একটু বলা উচিত। এই ম্যাচের আগে তামিমের সঙ্গে তাঁর একটা ‘লড়াই’ ছিল। লড়াই বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম ১ হাজার রান করা নিয়ে। তাতে হেরে গেছেন। তবে ৯ বলে অপরাজিত ১৭ রানের ছোট্ট ঝড়ের পর ১৫ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার-সেরা বোলিং। সাকিবও এই ম্যাচটা মনে রাখবেন।
মনে রাখবে বাংলাদেশও। ওমানের বিপক্ষে জয় আর এমন কী, তবে এই জয়েই যে টি-টোয়েন্টির আসল পর্বে উত্তরণ। যেটির শুরু আগামী বুধবার পাকিস্তানকে দিয়ে।
বাংলাদেশকে ডাকছে ইডেন গার্ডেন!
সঙ্গেও পাওয়ার প্লের শেষে এতটা বিবর্ণ থাকেনি বাংলাদেশের স্কোরবোর্ড (সর্বনিম্ন ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৩১/২)।

ডুমিনিঝড়ে ধরাশায়ী ভারত


ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিততে মরিয়া হয়ে আছে ভারত। সে লক্ষ্যে প্রস্তুতিপর্বের শুরুটা ভালোভাবেই করেছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। ৪৫ রানে হারিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। তবে দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে স্বাগতিকদের। উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে প্রোটিয়ারা জিতেছে মাত্র ৪ রানে।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা গড়েছিল ১৯৬ রানের পাহাড়। ৩৩ বলে ৫৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে প্রোটিয়াদের বড় সংগ্রহের ভীত গড়ে দিয়েছিলেন ওপেনার কুইনটন ডি কক। আর জেপি ডুমিনি খেলেছেন ৪৪ বলে ৬৭ রানের ইনিংস।
১৯৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ভারতও চলে গিয়েছিল জয়ের অনেক কাছাকাছি। ৫৩ বলে ৭৩ রানের ইনিংস খেলে ভারতকে জয়ের পথে অনেকখানি এগিয়ে দিয়েছিলেন শিখর ধাওয়ান। ২৬ বলে ৪‌১ রান করেছেন সুরেশ রায়না। ১৬ বলে ৩০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে জেতানোর সর্বোচ্চ চেষ্টাই করেছিলেন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। জয়ের জন্য শেষ ওভারে ভারতের প্রয়োজন ছিল ১৪ রান। কিন্তু ধোনি ও যুবরাজ সিং সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন ৯ রান।
প্রস্তুতি ম্যাচে বল হাতে ভালো নৈপুণ্য দেখিয়েছেন ভারতের তিন পেসার হার্দিক পান্ডে, মোহাম্মদ সামি ও জাসপ্রিত বুমরা। চার ওভার বল করে ৩৬ রানের বিনিময়ে তিনটি উইকেট নিয়েছেন পান্ডে। দুটি করে উইকেট গেছে সামি ও বুমরার ঝুলিতে। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে বল হাতে সাফল্য পেয়েছেন কাইল অ্যাবট, ডেল স্টেইন ও ইমরান তাহির। তিনজনই নিয়েছেন একটি করে উইকেট।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অপর প্রস্তুতি ম্যাচে জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড। নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছে ৬ উইকেটের ব্যবধানে। চার বল হাতে রেখেই জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ১৭০ রান সংগ্রহ করে ফেলেছিলেন ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা।

Saturday, March 12, 2016

বাংলাদেশ দলের সম্ভাব্য একাদশ


বৃষ্টি সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে যদি ম্যাচ মাঠে গড়ায় তাহলে ধর্মশালায় জয়ের বিকল্প নেই মাশরাফি বিন মর্তুজার দলের। আর তাই প্রতিপক্ষ নবাগত ওমান হলেও ম্যাচটা বাংলাদেশের জন্য ফাইনালের মতই গুরুত্বপূর্ণ।

টিম ম্যানেজমেন্ট সূত্রে খবর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের মত এই ম্যাচেও চার পেসার নিয়ে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। তবে বাঁ-হাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে আজও কোন ঝুঁকি নিতে চাইছে না বাংলাদেশ। ফলে মাশরাফি বিন মুর্তজা, তাসকিন আহমেদ ও আল আমিন হোসেনের সাথে জুটি বাঁধবেন আরেক বাঁ-হাতি পেসার আবু হায়দার রনি।

এদিকে বোলিং অ্যাকশনের দায়ে অভিযুক্ত দুই বোলারের মধ্যে আরাফাত সানি চেন্নাইতে আইসিসি অনুমোদিত সেন্টারে পরীক্ষা দিয়ে ফেলেছেন এরই মধ্যে। রোববার ওমানের বিপক্ষে ম্যাচের আগেই ধর্মশালাতেই দলের সাথে আবার এই বাঁ-হাতি স্পিনার যোগ দেবেন বলেও জানা গেছে।

তবে তার ম্যাচ খেলার সম্ভাবনা কম। ব্যাটিং অর্ডারে একটা পরিবর্তন আসতে পারে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একাদশে ছিলেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিথুন। তাকে সরিয়ে নাসির হোসেন কিংবা কাজী নুরুল হাসান সোহানকে দেখা যেতে পারে একাদশে।

বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ :
মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, নাসির হোসেন/মোহাম্মদ মিথুন/কাজী নুরুল হাসান সোহান, আল-আমিন হোসেন, তাসকিন আহমেদ, আবু হায়দার রনি। খেলা শুরু হবে রাত ৮ টা বাজে। খেলা দেখুন সরাসরি আমাদের সাইটে।

আজ বাংলাদেশ ও ওমানের ফাইনাল লড়াই


http://cricketlivestreaming-tv.blogspot.com/
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে আজ রোববার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ওমান। দুই দলেরই এটি তৃতীয় ম্যাচ। তবে ক্রিকেটে প্রতিপক্ষ হিসেবে দল দুটি একে অপরের কাছে একেবারে অচেনা। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) সহযোগী সদস্য দেশটির বিপক্ষে এর আগে কখনোই কোনো ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ।

তবে এই অচেনা ওমানকেও খাটো করে দেখতে নারাজ বাংলাদেশ। তাই এই দলের বিপক্ষে কিছুটা সতর্ক মাশরাফিরা। ভারতের হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় আজ রোববার বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হবে ম্যাচটি।

আজকের ম্যাচটি দুই দলের জন্যই অনেকটা অঘোষিত ফাইনাল। কারণ যে দল জিতবে, সে দলই সুপার টেনে উঠে যাবে।

শক্তি-সামর্থ্যের বিচারে এই ম্যাচে পরিষ্কারভাবে ফেভারিট বাংলাদেশ। তারপরও প্রতিপক্ষকে খাটো করে দেখতে রাজি নন বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিক।

গতকাল শনিবার ধর্মশালায় এক সংবাদ সম্মেলনে হিথ স্ট্রিক বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে, এই ওমানই আয়ারল্যান্ডের মতো দলকে হারিয়ে অঘটন ঘটিয়েছে। তাই তাদের মোটেও খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। তাই বড় দলগুলোর বিপক্ষে যে প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামতাম আমরা, এই দলটিকেও ততটাই গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা।’

ওমানকে গুরুত্ব দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা দিয়ে হিথ স্ট্রিক বলেন, ‘আসলে ওমানের বিপক্ষে আমাদের এর আগে কখনোই খেলার সুযোগ হয়নি। তাদের সম্পর্কে আমাদের কাছে খুব বেশি তথ্যও নেই। তাই অচেনা প্রতিপক্ষকে নিয়ে একটু সতর্ক থাকতেই হচ্ছে আমাদের।’

বাছাইপর্বের ‘এ’ গ্রুপ থেকে সুপার টেনে ওঠার জন্য এই ওমানই এখন বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী। দুই দলেরই সমান তিন পয়েন্ট করে রয়েছে। তবে নিট রানরেটে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।

নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ৮ রানে জিতলেও নির্ধারিত ২০ ওভারে তুলেছে ১৫৩ রান। আর দ্বিতীয় ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত পরিত্যক্ত হয়েছে ঠিক, কিন্তু রান তোলার হার বেশ ভালো ছিল, কার্টেল ওভারের সেই ম্যাচে ৮ ওভারেই মাশরাফিরা তুলেছেন ৯৪ রান।

তাই বাংলাদেশের এখন নিট রানরেট আছে +০.৪০০। আর ওমানের নিট রানরেট +০.২৮৩। স্বাভাবিক কারণে মাশরাফিরা কিছুটা এগিয়ে আছে। তাই বৃষ্টির বাধায় যদি শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি নাও হয়, বাংলাদেশেরই পরবর্তী পর্বে ওঠার সম্ভাবনা বেশি।

অবশেষে ভারত আসল পাকিস্তান

দীর্ঘ নাটকের পর পাকিস্তানের আবির্ভাবে সিএবি-র শীর্ষ কর্তারা কেন অনুপস্থিত? প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় টেক্সট মেসেজের কোনও উত্তর দেননি। সিএবি-র আর এক কর্তা বললেন, আইসিসি-র টুর্নামেন্ট খেলতে আসা টিমকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানানোর রেওয়াজ নেই। দুই স্থানীয় ম্যানেজার মইন বিন মাকসুদ ও দানিশ শেঠ ছাড়া তাই সিএবি-র কোনও প্রতিনিধিত্ব এই রাতে ছিল না।
আফ্রিদিদের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা অবশ্য পুরোদমেই দেখা গেল দমদম বিমানবন্দর এবং টিম হোটেলে। অভিবাসন কাউন্টার থেকে টিম বাস— এই রাস্তাটা আসতেই আফ্রিদিদের পেরোতে হয় নিরাপত্তার চার-চারটি স্তর। সিআইএসএফ, বিধাননগর পুলিশ স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চ, কলকাতা পুলিশের কমান্ডো ও র‌্যাফ মিলিয়ে প্রায় দেড়শো জনের নিরাপত্তা বাহিনী। ছিল স্নিফার ডগও। বিমানবন্দর থেকে আলিপুরের হোটেলে পাক দলকে নিয়ে আসার সময় গোটা রাস্তা টিম বাসের সামনে ছিল সেই কমান্ডো বাহিনী। এমনকী একটা ডামি বাসও!
আবু ধাবি থেকে এসে রাত পৌনে ৮টা নাগাদ শহরে পা দেয়া, সাড়ে ৯টায় আলিপুরের টিম হোটেলে ঢোকা— প্রায় দু’ঘণ্টার যাত্রাপথ ছিল অবশ্য একেবারেই ঝ়ঞ্ঝাটহীন। বিমানবন্দরে শ’দুয়েক ক্রিকেট পাগল পাক তারকাদের দেখার জন্য ভিড় জমিয়েছিলেন বিকেল থেকেই। টার্মিনাল থেকে বেরোতে না বেরোতেই তাদের চিৎকারে প্রথমে কিছুটা হতভম্ব দেখাল পাক অধিনায়ককে। পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিয়ে জমায়েতের উদ্দেশে হাত নেড়ে বাসের দিকে হাঁটা দিলেন আফ্রিদি। তার একটু পরেই দীর্ঘকায় পেসার মোহম্মদ ইরফান। শহরের ক্রিকেটভক্তদের প্রথমটায় এক বার ভাল করে মেপে নিয়ে তার পর তাদের দিকে চোখ টিপে উঠে পড়লেন বাসে। এই দু’জনের ফাঁকে, কেউ ভালোভাবে নজর করার আগেই বেরিয়ে এসেছেন মোহাম্মদ আমের। ভিড়টা কিন্তু তার পরেও খুঁজে গেল পাকিস্তানি পেসারকে!
আফ্রিদিরা যে কতটা ফুরফুরে মেজাজে, বোঝা গেল বাস ছাড়ার পর। স্থানীয় ম্যানেজারের কাছে পাক ম্যানেজার ইন্তিখাব আলম জানতে চান গুলাম আলির কলকাতা-কনসার্টের ব্যাপারে। নিউটাউনের রাস্তায় ঢুকতে না ঢুকতেই নাকি আফ্রিদি বলে ওঠেন, ‘‘আরে! তোমাদের শহরটাকে তো রাতে চেনাই যাচ্ছে না। চারদিকে এত আলো! সত্যি কলকাতা অনেক পাল্টে গিয়েছে।’’ রাস্তার দু’ধারের বহুতলগুলো দেখতে দেখতে আবার আমেরের রসিকতা, ‘‘জানেন, আমিও কিন্তু ধনী পরিবারের ছেলে। বাড়িতে ১১১টা মোষ আছে। যার প্রত্যেকটা তিরিশ কেজি দুধ দেয়!’’ যা নিয়ে বাসের মধ্যেই শুরু হয়ে যায় ইরফানদের হাসাহাসি। কেউ কেউ পাক পেসারকে টিপ্পনী কাটাও শুরু করে দেন।
যার রেশ চলল হোটেল পর্যন্ত। যেখানে কলকাতা পুলিশের এক বড়কর্তাকে দেখে আমেরের রসিকতা, ‘‘ইনি কি সিংহম? তা হলে সিংহম রিটার্নস কোথায়?’’ একটা ব্যাপারে অবশ্য প্রচণ্ড সিরিয়াস নির্বাসন কাটিয়ে টিমে ফেরা পাক পেসার। গোটা টিম যখন স্থানীয় সিম কার্ড নিতে ব্যস্ত, শুধু তিনি তা একেবারেই নিতে চাইলেন না। বরং স্থানীয় ম্যানেজারকে বলে দিলেন, ‘‘ও সব থেকেই যত ঝামেলা! আমার দরকার নেই। আপনার মোবাইল থেকেই না হয় বাড়িতে ফোন করে দেব।’’
টিম ডিনারে আবার দেখা গেল পাক সৌজন্য। দুই স্থানীয় ম্যানেজারের জন্য টিম জার্সি নিয়ে
নামেন আফ্রিদি। তাঁদের ডেকে নেন টিমের ‘নো কার্বোহাইড্রেট, নো ডেজার্ট’ নৈশভোজে। বদলে পাক টিমের মেনুতে ছিল চাইনিজ আর ১৯ মার্চের মহাযুদ্ধ নিয়ে টুকটাক আলোচনা। আর ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দেওয়া— ঠাট্টা-ইয়ার্কি থাকবে। থাকবে সৌজন্যও। কিন্তু এগুলো সব মাঠের বাইরে।

বাংলাদেশ ২০টি বিশ্বকাপ থেকে আজই বিদায় নিতে পারে যদি..

২০ টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলার জন্য আজকের ম্যাচ টি বাংলাদেশের জিততে হবে। আর যদি দুর্ঘটনা ক্রমে আজ বাংলাদেশ হেরে যায় তবে বাংলাদেশের পরিবর্তে মূল পর্বে জায়গা করে নিবে নবাগত ক্রিকেট শক্তি ওমান।
বাংলাদেশ দলের ও ওমান দলের পয়েন্ট সমান সামান। তাই আজকের ম্যাচ-ই দুদলের মধ্যে পার্থক্য করে দিবে। একনজরে দুদলের পয়েন্ট টেবিল। আর সরাসরি বাংলাদেশ বনাম ওমানের খেলা দেখতে আমাদের সাইট ভিজিট করুন।
First Round Group A














TeamsMatWonLostTiedN/RPtsNet RR
Bangladesh2100130.4
Oman2100130.283
Ireland201011-0.283
Netherlands201011-0.4








First Round Group B














TeamsMatWonLostTiedN/RPtsNet RR
Afghanistan3300080.805
Zimbabwe3210040.625
Scotland202000-0.625
Hong Kong202000-0.789